তেল আবিব, ২৪ জুলাই – ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেট একটি প্রতীকী প্রস্তাব পাস করেছে। ওই প্রস্তাবে অধিকৃত পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের অংশ করে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) এই প্রস্তাবটি ৭১-১৩ ভোটে গৃহীত হয়। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলি পালামেন্টে পাস হওয়া এই প্রস্তাবের যদিও কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই, তবুও এটিতে “ইহুদি, সামারিয়া ও জর্ডান উপত্যকায় ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব প্রয়োগের” কথা বলা হয়েছে। মূলত এই অঞ্চলগুলো তথা পশ্চিম তীরকে ইসরায়েল এই নামেই ডেকে থাকে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরকে (ইসরায়েলের সঙ্গে) সংযুক্ত করা হলে ইসরায়েলের নিরাপত্তা আরও মজবুত হবে এবং “ইহুদি জনগণের তাদের নিজ ভূমিতে শান্তি ও নিরাপত্তার মৌলিক অধিকারের” বিষয়ে আর কোনও প্রশ্ন তোলা যাবে না।
আল জাজিরা বলছে, এই প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয়। যদিও এটি আইনত বাধ্যতামূলক নয়, তবুও ভবিষ্যতে পার্লামেন্টে এই ইস্যু নিয়ে আরও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলো।
এই পশ্চিম তীরে এখন প্রায় ৩০ লাখ ফিলিস্তিনি এবং ৫ লাখের বেশি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী বাস করে।
ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব চায়, ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রে এই তিনটি অঞ্চল (পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেম) অন্তর্ভুক্ত হোক। কিন্তু পশ্চিম তীর দখল করে নিলে এমন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। কারণ স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনই বিশ্বজুড়ে এই সংঘাতের সবচেয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান হিসেবে বিবেচিত।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ডেপুটি হুসেইন আল-শেইখ বলেন, “এই প্রস্তাব সরাসরি ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের ওপর আঘাত। এটি শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং দুই-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দেয়।”
তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে আরও লেখেন, “ইসরায়েলের এই একতরফা পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক আইন এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের মর্যাদা নিয়ে আন্তর্জাতিক ঐকমত্যের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।”
মন্ত্রণালয় আরও সতর্ক করে বলেছে, এমন পদক্ষেপ “দুই-রাষ্ট্র সমাধানকে ধ্বংস করে দিচ্ছে”। তাদের মতে, পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে বাস্তবে প্রতিদিনই ‘দখল’ কার্যকর হচ্ছে।
মূলত গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ভয়াবহ হামলার পরে পশ্চিম তীরেও সহিংসতা অনেক বেড়ে গেছে। ইসরায়েলি সেনারা ফিলিস্তিনিদের গ্রাম ও শহরে বারবার অভিযান চালাচ্ছে, বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন এবং শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরাও সেনাদের সহায়তায় ফিলিস্তিনিদের জমি, বাড়িঘর ও সম্পত্তির ওপর হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ২৪ জুলাই ২০২৫