জেরুজালেম, ৩১ জুলাই – অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় কেবল খাবারের সন্ধানে ছুটতে থাকা অন্তত ৯১ ফিলিস্তিনি নাগরিককে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। বৃহস্পতিবার গাজার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় সহায়তা নিতে গিয়ে ১১১ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কেবল মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৯১ জন। একই সময়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় আহত হয়েছেন ৮২০ ফিলিস্তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলের শুরু করা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার ২৪৯ জন ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। ইসরায়েলি যুদ্ধে গাজায় আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯ জন ফিলিস্তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৭ মে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী নতুন ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থার চালু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৩০ জন নিহত ও ৮ হাজার ৮১৮ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক দাতব্য সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) গাজায় নিয়োজিত তাদের কর্মী দালিয়ার একটি বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করেছে।
ইসরায়েল — যা গাজায় সব ধরনের সরবরাহের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে — কিছু এলাকায় দিনের বেলা সামরিক অভিযান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখছে, যাতে ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ করতে পারে।
বর্তমানে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ কাজের সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছে ইসরায়েলি সংস্থা কোগাত (সিওজিএটি)। সংস্থাটি বলেছে, বুধবার ২৭০টি ত্রাণবাহী ট্রাক ও দুটি জ্বালানিবাহী ট্যাংকার গাজায় প্রবেশ করেছে। এছাড়াও মিসর, জর্ডান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহায়তায় আকাশপথে ৩২টি প্যালেট থেকে ত্রাণ সরবরাহ করা হয়েছে।
তবে ত্রাণ সংস্থাগুলো বলেছে, গাজায় প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০০ থেকে ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাকের প্রয়োজন। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার বলেছেন, গাজায় বর্তমানে যতটুকু ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় ‘‘সমুদ্রে এক ফোঁটা’’ পানি ফেলার মতো।
তিনি বলেন, রোববার গাজায় প্রবেশের পর জাতিসংঘের অধিকাংশ খাদ্যবাহী ট্রাক লুট করে নেওয়া হয়েছে। টম ফ্লেচার বলেন, এসব ট্রাকের বেশিরভাগই ক্ষুধার্ত সাধারণ মানুষের ক্রোধের শিকার হয়েছে।