ক্যানবেরা, ১৬ আগস্ট – পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক টেস্ট অধিনায়ক এবং প্রথম পূর্ণকালীন কোচ বব সিম্পসন। ৮৯ বছর বয়সে সিডনিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অসি ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি।
সিম্পসন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের একজন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে অসিদের হয়ে ৬২টি টেস্ট খেলেছেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ব্যাটিং গড় ৪৬.৮১ এবং বল হাতে নিয়েছেন ৭১ উইকেট। সময়ের অন্যতম সেরা স্লিপ ফিল্ডার হিসেবেও তার হাঁকডাক ছিল।
১৬ বছর বয়সে নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় সিম্পসনের। ঘরোয়া এই ক্রিকেটে ব্যাট হাতে করেন ২১,০২৯ রান করেন এবং লেগ-স্পিন গুগলিতে নেন ৩৪৯টি উইকেট।
অধিনায়ক হিসেবে ২৯টি টেস্ট খেলে ১৯৬৮ সালে প্রথমবার অবসর নেন সিম্পসন। তবে ১৯৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের সংকটময় অবস্থায় আবারও মাঠে ফেরেন। ৪১ বছর বয়সে ভারতের বিপক্ষে পাঁচটি এবং পূর্ণ শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাঁচটি টেস্টে নেতৃত্ব দেন তিনি।
টেস্ট ক্যারিয়ারে ১০টি সেঞ্চুরি করেন সিম্পসন, সবগুলোই অধিনায়ক থাকাকালে। এর মধ্যে ১৯৬৪ সালে ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১১ রান ছিল তার ক্যারিয়ারের প্রথম শতক, যা আসে ৩০তম টেস্টে। এছাড়া তিনি দুটি ডাবল সেঞ্চুরিও করেন। অধিনায়ক হিসেবে তার ব্যাটিং গড় ছিল ৫৪.০৭। অথচ অধিনায়কত্বের আগে তার গড় ছিল মাত্র ৩৩.৬৭; কোনো শতকও ছিল না।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চেয়ারম্যান মাইক বেয়ার্ড বলেন, ‘বব সিম্পসন ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের মহীরূহ। ১৯৭৭ সালে অবসর ভেঙে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যে সেবা করেছিলেন তিনি, তা ছিল অসাধারণ। তার কোচিং অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের সোনালী যুগের ভিত্তি গড়ে তোলে।’
শেন ওয়ার্নসহ অনেক খেলোয়াড় তাকে সর্বকালের সেরা কোচ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। ওয়ার্ন স্বীকার করেছেন, নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে বল করার পরামর্শ দিয়েছিলেন সিম্পসন।
৭০ বছর বয়স পর্যন্ত কোচিং চালিয়ে যান সিম্পসন। নেদারল্যান্ডসকে ২০০৭ বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করানোর কৃতিত্বও তার। ১৯৭৮ সালে অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়ার সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০৭ সালে তাকে অফিসার (এও) পদে উন্নীত করা হয়।
১৯৬৫ সালে উইজডেন ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হন সিম্পসন এবং আইসিসি হল অব ফেম ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট হল অব ফেমের সদস্য হন।