লন্ডন, ২৭ জুলাই – ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় দীর্ঘ ২২ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রায়ই প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। এবার সেই প্রতিবাদের ব্যতিক্রমী একটি ধারা দেখা গেল যুক্তরাজ্যে। হাজারো হাঁড়ি-পাতিল ফেলে রাখতে দেখা গেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কার্যালয়ের সামনে ।
শনিবার (২৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
সংবাদসংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় প্রতিদিনই না খেয়ে মারা যাচ্ছেন মানুষ। অনাহারের কারণে অপুষ্টিতে ভুগছে বহু শিশু। হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের সামনে গাজাবাসীর দাঁড়িয়ে থাকার অনেক ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। সেই দৃশ্যের প্রতীকী অবতারণা ঘটাতেই লন্ডনের ডাউনিং স্ট্রিটে হাঁড়ি-পাতিল ফেলে রেখে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কার্যালয়ের সামনে হাজারো হাঁড়ি-পাতিল ফেলে রেখে গাজায় ইসরায়েলের ‘ইচ্ছাকৃত দুর্ভিক্ষ নীতির’ বিরুদ্ধে প্রতীকী এই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে গত শুক্রবার (২৫ জুলাই)।
‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইন’সহ (পিএসসি) বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে হওয়া এই বিক্ষোভে বলা হয়, গাজায় খাবারের খোঁজে বের হয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে স্মরণ করেই এই হাঁড়িগুলো রাখা হয়েছে।
একজন বিক্ষোভকারী ক্লাইভ বলেন, গাজায় যে নির্দয় দুর্ভিক্ষ চলছে, তার যেন কোনো শেষ নেই। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে ‘এন্টিসেমিটিক’ বলে ট্যাগ দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধের কথা বলেছে। তারপরও কেউ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ইসরায়েল নির্বিচারে হত্যা চালিয়ে যাচ্ছে—শিশু, নারী, সাধারণ মানুষও রেহাই পাচ্ছে না।
আরেকজন বিক্ষোভকারী পল বলেন, প্রতিদিন গাজায় বোমা পড়ছে, শিশু মরছে, মানুষ না খেয়ে আছে। এটা দিনের পর দিন চলছে। ইসরায়েলি নেতারা প্রকাশ্যে বলছেন, ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করতে হবে। বন্দিদের ওপর নির্যাতন করাও ঠিক—তাদের মধ্যে কোনো লজ্জা নেই।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু নির্বিচার আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৬০ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সেইসঙ্গে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা, তৈরি হয়েছে চরম খাদ্যসংকট।