নিজস্ব প্রতিবেদক::
কক্সবাজারের উখিয়ায় ২ একর ১০ শতক ভোগদখলীয় জমি জাল দলিল ও ভূয়া খতিয়ান তৈরি করে জোরপূর্বক দখলের অভিযোগে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম ও তার শ্যালক খায়রুল আমিন রুবেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে দুদকের কক্সবাজার জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক ও টিম লিডার মুহাম্মদ হুমায়ুন বিন আহমদের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল ঘটনাস্থলে সরেজমিনে পরিদর্শনে যায়।
ভুক্তভোগী রফিকুল আলম মাহমুদের অভিযোগ, তাদের পিতা মরহুম হাজী রশিদ আহমদ ২০০০ সালে বৈধভাবে উক্ত জমিটি ক্রয় করেন এবং দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছিলেন। কিন্তু ২০০৫ ও ২০০৯ সালে ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে ও জাল দলিল তৈরি করে জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টা চালান উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখাঁ মাতবর পাড়ার বাসিন্দা সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম ও জালিয়াপালং ইউনিয়নের দক্ষিণ পাইন্যাশিয়া এলাকার বাসিন্দা খায়রুল আমিন রুবেল।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, দলিলে ব্যবহৃত দলিলদাতার নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরে স্পষ্ট অসঙ্গতি রয়েছে, যা প্রমাণ করে দলিলটি জাল ও ভিত্তিহীন। এ ছাড়া অভিযুক্তরা সন্ত্রাসী বাহিনীর সহায়তায় জমিতে জোরপূর্বক পাকা স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে।
তাদের অভিযোগ, ঘটনার পর তারা সহায়তার জন্য ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), জেলা রেকর্ডরুম, থানা ও অন্যান্য সরকারি দপ্তরে বারবার আবেদন জানালেও দীর্ঘদিন কোনো প্রতিকার পাননি। প্রভাবশালী হওয়ায় অভিযুক্তরা বিভিন্ন পর্যায়ের তদন্ত প্রভাবিত করেছেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ পাওয়ার পর দুদক টিম সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে এবং সরেজমিনে গিয়ে জমির ওপর নির্মিত ১০টি পাকা দোকানঘর দেখতে পায়।
এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিক আহমদ দুদক টিমের সঙ্গে উপস্থিত থেকে বলেন, এই জমির প্রকৃত মালিক রশিদ আহমদের পরিবার। আমি এলাকাবাসীসহ বহুবার দেখে এসেছি তারা শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছে। এখানে জালিয়াতির মাধ্যমে দখলচেষ্টার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি আইন অনুযায়ী দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই।
তদন্তকারী কর্মকর্তা মুহাম্মদ হুমায়ুন বিন আহমদ বলেন,ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। সকল কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে কমিশনে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।”
এদিকে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল দলিল তৈরি করে জমি দখলের ঘটনায় স্থানীয় সচেতন মহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
###