মাদরাসার ভেতরে শিক্ষা অফিসের গুদাম
কক্সবাজারের চকরিয়ায় উম্মাহাতুল মুমিন মহিলা মাদরাসার শ্রেনি কক্ষে রক্ষিত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের বিপুল পরিমাণ সরকারি পাঠ্যবই পুড়ে গেছে। শনিবার ভোররাত আনুমানিক তিনটার দিকে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ লাগোয়া ওই মাদ্রাসার ভেতরে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
ভোররাতে অগ্নিকাণ্ডের সুত্রপাত হলেও প্রায় ৬ ঘন্টা পর শনিবার সকাল ৯টায় চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষনে মাদরাসার ভেতরে রক্ষিত সরকারি বিপুল পরিমাণ বই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষাক্রমের আওতায় সরকারি পাঠ্যবই ছাপা হয়েছে। সেকারণে আগের শিক্ষাবর্ষ তথা ২০২৪ ও ২০২৩ সালের পাঠ্যবই সিলেবাস গুলো বাতিল করা হয়। বাতিলকৃত এসব বই উপজেলা পরিষদ লাগোয়া ওই মাদরাসায় জমা রাখা হয়। মুলত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের নিজস্ব কোন গোডাউন না থাকায় বইগুলো সেখানে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, মাদরাসার কক্ষে প্রায় লক্ষাধিক বই ছিল। তারমধ্যে অগ্নিকাণ্ডে ৭-৮ হাজার বই পুড়ে গেছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন জানিয়েছে, পুড়ে যাওয়া বইয়ের সংখ্যা অনেক বেশি হবে।
চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে বিদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি সকাল পৌঁনে ৯টার দিকে আমাদেরকে জানানো হয়েছে। এরপর তাৎক্ষণিক আমাদের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
চকরিয়া উম্মাহাতুল মুমিন মহিলা মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবুল হোসেন আনসারী জানান, আমাদের মাদরাসার চারটি কক্ষে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম সরকারি বই গুলো প্রায় ৩বছর হচ্ছে রেখেছে। আমাদের একদিকে শ্রেণিকক্ষের ঘাটতি, অন্যদিকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস কতৃক মাদরাসার চারটি কক্ষ ব্যবহার করায় শ্রেনিকক্ষ সংকট আরও বেড়েছে। এ বিষয়টি সাবেক ইউএনওকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি।
অগ্নিকাণ্ডে সরকারি পাঠ্যবই পুড়ে যাওয়ার ঘটনাটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পেরে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চকরিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ন দেব।
জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ন দেব বলেন, কীভাবে বইগুলো পুড়েছে, তা তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ডাকা হয়েছে। এব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ##