নয়াদিল্লি, ০৫ আগস্ট – বছরের পর বছর ধরে রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় জ্বালানি তেল কেনায় ভারতের ওপর আরও শুল্ক চাপানোর যে হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প—তাকে ‘অন্যায্য’, ‘অযৌক্তিক’ বলে আখ্যায়িত করেছে ভারত। সেই সঙ্গে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ক্রয় অব্যাহত রাখারও ইঙ্গিত দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার জ্বালানি তেল, গ্যাস, কয়লা, সার, যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, রাসায়নিক দ্রব্যসহ প্রায় সব পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
সেখানে বলা হয়েছে, “ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৪ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ৬ হাজার ৭৫০ কোটি ইউরোর সমপরিমাণ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য করেছে। তার আগের বছর ২০২৩ সালে করেছে ১ হাজার ৭২০ কোটি ইউরোর সমপরিমাণ বাণিজ্য। ভারত রাশিয়ার সঙ্গে সারা বছর যে বাণিজ্য করে, তার চেয়ে এই পরিমাণ অনেক বেশি।”
“ইউরোপ জ্বালানির পাশাপাশি সার, খনির যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক দ্রব্য, লোহা, ইস্পাত, মেশিনারি এবং পরিবহন সংক্রান্ত পণ্যের জন্য রাশিয়ার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। নিষেধাজ্ঞার পরও এই নির্ভরশীলতা আছে।”
“অন্যদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধজ্ঞা জারির পরও যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়র কাছ থেকে তার পরমাণু শিল্পের জন্য হেক্সাফ্লোরাইড, বৈদ্যুতিক যানবাহনে ব্যবহারের জন্য পাল্লাডিয়াম, সার ও রাসায়নিক পণ্য আমদানি করছে।”
ভারতের ওপর ইতোমধ্যেই ২৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। ৭ আগস্ট থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা আছে।
গত কাল সোমবার রাতে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ভারতকে দায়ী করে দেশটির ওপর আরও বেশি শুল্ক আরোপের হুমকি দেন তিনি। ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, রাশিয়ার চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধে ইউক্রেনে কত মানুষ নিহত হচ্ছেন, সে বিষয়টি আমলে না নিয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনেই যাচ্ছে ভারত। এ কারণে তিনি ভারতের পণ্যের ওপর উল্লেখযোগ্যভাবে শুল্কের পরিমাণ আরও বাড়াবেন।
ট্রাম্পের এই পোস্ট দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এ ইস্যুতে বিবৃতি দেয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ০৫ আগস্ট ২০২৫