ঢাকা, ১৬ আগস্ট – দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের সমাধানে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদারের অংশ হিসেবে মালয়েশিয়ার প্রভাবকে কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের সভাপতি হিসেবে মালয়েশিয়ার এই ভূমিকার ব্যবহার করতে চায় ঢাকা। মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বারনামাকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ ওই সাক্ষাৎকার বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে বারনামা। এতে তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয়দানের অভিজ্ঞতা এবং আসিয়ানে নেতৃত্বের অবস্থান মিলিয়ে মালয়েশিয়া আঞ্চলিক এই সংকটের সমাধানের ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখতে পারে।
২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বারনামার প্রধান সম্পাদক আরুল রাজু দুরার রাজ, ইন্টারন্যাশনাল নিউজ সার্ভিসের সম্পাদক ভুন মিয়াও পিং ও বারনামার ইকোনমিক নিউজ সার্ভিসের সহকারী সম্পাদক কিশো কুমারী সুসেদারাম।
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেছেন, আমরা আশা করছি, মালয়েশিয়া পুরো আলোচনায় তাদের প্রভাব খাটাবে; যাতে আমরা এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারি। সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সরকারি সৈন্যদের মাঝে চলমান সংঘর্ষ রোহিঙ্গা সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে। এর ফলে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, কেবল গত ১৮ মাসেই নতুন করে ১ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়েছেন। এর সঙ্গে আগে থেকেই পালিয়ে আসা ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আছেন। ফলে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। আরও ভয়াবহ হলো, যুক্তরাষ্ট্র তাদের (রোহিঙ্গাদের) তহবিল পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য বিশাল সমস্যা।
মালয়েশিয়া ১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থী সনদ বা ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলে স্বাক্ষরকারী না হলেও মানবিক দিক বিবেচনায় দেশটিতে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দিয়ে আসছে।
রোহিঙ্গা সংকটের শুরু হয় ২০১৭ সালে। ওই সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে রাখাইন রাজ্য থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ১৬ আগস্ট ২০২৫