শিরোনাম ::
৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই আইএমও নির্বাচনে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন চাইলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা ও প্রাণিসেবা আধুনিকায়নের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার গাজীপুরে বাড়ছে নির্বাচনী আসন, কমছে বাগেরহাটে শেখ হাসিনার রাতের ভোটের পরামর্শদাতা তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী! রাষ্ট্র মেরামতের এ সুযোগ কোনোভাবেই মিস করলে চলবে না তাবলিগ জামাতের দুইপক্ষের বিবাদ মেটাতে কমিটি গঠন করছে সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা নিয়ে মাউশির নতুন নির্দেশনা জামায়াত আমীরের হার্টে একাধিক ব্লক, জরুরি ভিত্তিতে বাইপাস সার্জারির সিদ্ধান্ত ছাত্র উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাদের পদত্যাগে বাধ্য করার চেষ্টা হচ্ছে
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৫:২২ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

সাংবিধানিক নয়, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির পক্ষে বিএনপি

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫


ঢাকা, ৩০ জুলাই – জুলাই জাতীয় সনদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে নয় বিএনপি। এতে রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে মনে করে দলটি। এর আগে জুলাই ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক স্বীকৃতির বিষয়েও ভিন্নমত পোষণ করে বিএনপি। দলের উচ্চ মহল জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে।

গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। সরকার প্রেরিত জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫-এর খসড়া এবং জুলাই ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে এই বৈঠকে নানা মতামত উঠে এসেছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে লন্ডন থেকে ভাচর্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, জুলাই সনদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হলে কয়েকটি দলের ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’-এর দাবি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হবে। তখন ওই দলগুলো এটাকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে প্রচার করতে থাকবে, যা ভবিষ্যতে বিতর্ক তৈরি করতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেতা বলেন, জুলাইয়ে গণ-অভ্যুত্থান হলেও এটা দ্বিতীয় স্বাধীনতা না। কারণ এটাতে নতুন করে দেশ স্বাধীন হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে জনগণের ওপর চেপে বসা একটা স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছে।

বিএনপি অবশ্য মনে করে, জুলাই সনদে রাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়া সংস্কার প্রস্তাব বা সুপারিশসমূহ নির্বাচিত পরবর্তী সরকার গঠনের দুই বছর মেয়াদকালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিছু বিষয়ে সংশোধনী দিয়ে সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। তেমন কোনো দ্বিমত নেই।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বিএনপি আর আলোচনা করতে চায় না। তবে জুলাই সনদ নিয়ে তারা আলোচনা অব্যাহত রাখবে। কারণ সংস্কারের ব্যাপারে তারা অত্যন্ত আন্তরিক।

৭ দফা জুলাই সনদের খসড়ার ৭ নম্বর দফায় বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সংবিধানে যথাযোগ্য স্বীকৃতি দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকব। ৬ নম্বর দফায় বলা হয়েছে, এই সনদ গৃহীত হওয়ার পর এতে যেসব প্রস্তাব বা সুপারিশ লিপিবদ্ধ রয়েছে, সেগুলো পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের দুই বছর মেয়াদকালের মধ্যে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, ঐকমত্য হওয়া সংস্কার প্রস্তাব বা সুপারিশসমূহ সরকার গঠনের দুই বছর মেয়াদকালের মধ্যে বাস্তবায়ন সম্ভব। জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটি ৭ নম্বর দফা তথা সনদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলেও খসড়ার বাকি ছয় দফা অঙ্গীকারনামার সঙ্গে একমত পোষণ করেছে।

গণ-অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ডিসেম্বর থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের চেষ্টা চলছে। কিন্তু এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতা আছে। গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা দ্রুততম সময়ে ঘোষণাপত্র চাইলেও এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিএনপি।

জানা গেছে, প্রথম খসড়ায় বলা হয়েছিল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে অভ্যুত্থান হয়েছে। ঘোষণাপত্রে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বিএনপি, জামায়াতসহ বিরোধী দলগুলোর সংগ্রামকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বিএনপির মতামতে পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বরের ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লব’, ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সরকারের করা সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্রে পুনঃপ্রবর্তনকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এক-এগারোকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের ফল বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

প্রথম খসড়ায় বলা হয়েছিল, অভ্যুত্থানের চেতনায় দেশ গড়তে সংবিধানকে বাতিল বা সংশোধন করা হবে। তবে চূড়ান্ত খসড়ায় বলা হয়েছে, মানবিক ও নাগরিক অধিকার সমুন্নত রাখতে সংবিধান সংস্কার করা হবে। এতে সুষ্ঠু নির্বাচন, আওয়ামী লীগের গুম-খুন-দুর্নীতির বিচারের অঙ্গীকার রয়েছে। অভ্যুত্থানে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের স্বীকৃতি রয়েছে।

বিএনপি আগেই জানিয়েছিল, জুলাই ঘোষণাকে সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে যুক্ত করতে চায় তারা। পুরো ঘোষণাপত্র নয়, অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি হিসেবে একটি অনুচ্ছেদ এবং ঘোষণাপত্রের উল্লেখ থাকবে।

জানা গেছে, ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দলটি সেখানে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করাসহ ভাষাগত কিছু পরিবর্তন এনেছে। দু-এক দিনের মধ্যে জুলাই সনদ এবং জুলাই ঘোষণাপত্র খসড়ার একটি কপি সরকারকে পৌঁছে দেবে বিএনপি।

সূত্র: কালের কণ্ঠ
এনএন/ ৩০ জুলাই ২০২৫



আরো খবর: