শিরোনাম ::
বাংলাদেশ সীমান্তে ‘অপারেশন অ্যালার্ট’ জারি করেছে বিএসএফ অন্তর্বর্তী সরকার এখন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত টাকা না দিলে ইয়াবা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি, ২ পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ বেলুচিস্তানে জঙ্গি হামলায় ৯ পাকিস্তানি সেনা সদস্য নিহত ৩৭ দিনে রাজ্যে তৃণমূলের ১০ নেতা-কর্মী খুন! পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী নাফনদী থেকে ৫ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি পেকুয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিটিটিসি
August 13, 2025, 2:42 am
নোটিশ::
আমাদের নতুন ডোমেইনে আপনাকে স্বাগতম, কক্সবাজার পোস্ট ডটকমের জনপ্রিয়তাকে পুজিঁ করে অনেক নতুন ফেইসবুক পেইজ খোলা হয়েছে,তাদের কার্যকলাপের জন্য আমরা দায়ী নয়  

উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের সেবার নামে স্হানীয়দের জায়গা দখল করে পুলিশের ব্যারাক নির্মাণ!

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: রবিবার, জুন ১২, ২০২২

ফারুক আহমদ,উখিয়া::

উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসরত ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জায়গা কেড়ে নিয়ে এবার জোরপূর্বক এপিবিএন পুলিশের অফিস ও ব্যারাক নির্মাণের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে গ্রামবাসীরা।

এদিকে ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠী তাদের সহায় সম্বলটুকু রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন , শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয় , ক্যাম্প ইনচার্জ এবং এপিবিএন পুলিশের নিকট দফায় দফায় দ্বারস্থ হলেও চতুর্মুখী রশি টানাটানিতে কোন সুরাহা পাচ্ছে না। বলতে গেলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর আহাজারিতে দিন দিন কান্না ভারি হচ্ছে।

এর আগেও স্থানীয়দের ধানী জমি ও ক্ষেত খামারের জায়গায় জবরদস্তিমূলক রোহিঙ্গাদের সেড তৈরি সহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার অফিস নির্মাণ এমন কি রোহিঙ্গাদের বর্জ্য শোনাগার সহ ময়লা আবর্জনার ডিপো স্থাপন করার অহরহ অভিযোগ রয়েছে ক্যাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে । এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় স্থানীয়দের উপর নানা জুলুম-নির্যাতন করা হয়েছে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের থাইংখালী তাজনীমার খোলা এলাকায় ঘোনার পাড়া হচ্ছে ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প। উক্ত ক্যাম্পের কাঁটাতারের বেড়ার ভিতর অসংখ্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বসতবাড়ি সহ জাগা জমি রয়েছে। বলতে গেলে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রোহিঙ্গাদের সাথে স্থানীয়দের বসবাস।
ওই এলাকার মৃত মেহের আলীর পুত্র আবুল হাসেম মৃত ওলা মিয়ার পুত্র শামশুল আলম অভিযোগ করে বলেন আমাদের জোত ও খতিয়ানভুক্ত জায়গা জোরপূর্বক জবরদখল করে ৮ এপিবিএন পুলিশের অফিস এবং ব্যারাক নির্মাণের কাজ শুরু করে। বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে উল্টো হুমকি-ধমকি দিয়ে আমাদেরকে জিম্মি করে রাখে। বিষয়টি সুরাহা করার জন্য শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সহ স্থানীয় প্রশাসন বরাবরে লিখিত অভিযোগ করা হলেও কোনো সুরাহা করা হচ্ছে না। বরং আমাদের জায়গায় মাটি ভরাট করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে।
মৃত গোলাম হোসেনের পুত্র হাজী নুরুল ইসলাম ও মৃত বাচা মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ আলম জানান, ৬১৫ নম্বর বিএস খতিয়ানের নিজস্ব জোত ও খতিয়ানি প্রায় ৫ একর জমিতে চাষাবাদ ও ক্ষেত খামার করে ১০/১২ টি পরিবার পরিজন নিয়ে কোনরকম জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলাম। এসব জায়গা জমি মগের মুল্লুকের মত কেড়ে নিয়ে আমাদেরকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে ।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ১৯ নম্বর ক্যাম্পের ইনচার্জ ( সিনিয়র সহকারী সচিব) সৈয়দ মাহবুবুল হক জানান অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ শামশু দৌজা নয়নের নেতৃত্বে এপিবিএন পুলিশ ও জন প্রতিনিধির সাথে বৈঠক বসে জায়গা পরিমাণ করে স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে বর্তমানে কি পরিস্থিতি বিরাজ করছে তিনি জানেন না বলে জানান।
ভুক্তভোগী আবুল হাসেম কান্না কন্ঠে জড়িত বলেন, অতিরিক্ত আরআরআরসি আমাদের জমির উপর কোন স্থাপনা করা হবে না মর্মে লিখিতভাবে সমাধান দিলেও পুলিশ তা কর্ণপাত করছে না । এপিবিএন পুলিশের ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ আলমগীর এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কারো জোত জায়গায় নই, সরকারি বন বিভাগের জায়গায় অফিস নির্মাণ করা হচ্ছে।
পালং খালী অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার রবিউল হোসাইন সাংবাদিকদের জানান যে কোন সরকারি সংস্থার জায়গা প্রয়োজন হলে বিধি মোতাবেক অর্থাৎ ক্ষতিপূরণ অথবা মাসিক চুক্তিভিত্তিতে নিতে পারে। কিন্তু ব্যক্তিমালিকানাধীন খতিয়ানী জোত জায়গা জবরদখল করে পুলিশের অফিস নির্মাণ করা খুবই দুঃখ জনক।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে অসংখ্য স্থানীয় জনগোষ্ঠী নিজ জায়গা ও বসতবাড়ি হারিয়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা সেবার নামে ব্যক্তিমালিকানাধীন জোত জায়গা জবর দখল করে কেড়ে নেয়া এক প্রকার মানবাধিকার লংঘন। এ ধরনের জুলুম নির্যাতন আর দেখিনি। এ বিষয়ে গত ৭ জুন আরআরআরসি অফিসে লিখিত অভিযোগ সরকারে গেল কোন সন্তোষজনক সদুত্তর পাননি বলে তিনি জানান।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী পরিবারের জোত জায়গা বিনা নোটিশে জবর দখল করে অফিস নির্মাণ করা খুবই দুঃখজনক । একমাত্র সহায় সম্বল জায়গা টুকু হারিয়ে ভুক্তভোগীদের কান্নার আর্তনাদ ভারি হয়ে উঠেছে। বিষয়টি মানবিক বিবেচনা করার জন্য জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত আরআরআরসি মোহাম্মদ শামশু দৌজা বলেন বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সাথে বৈঠক হয়েছে । এখনো জোত জায়গায় অফিসের নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে এমন বিষয় জানতে চাইলে আগামীকাল রবিবার অফিসে এসে বিস্তারিত জেনে নেয়ার আশ্বাস দেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর: