কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ডের ভাঙ্গারমুখ উত্তর বীণা মারা এলাকায় চার ভাসুর, ননদ ও ভাবীর হামলায় সানজিদা (২১) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিহত সানজিদা এক সন্তানের জননী ও ওই এলাকার আজিম উদ্দিনের স্ত্রী। রবিবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মর্মান্তিক এ ঘটনার বিচার দাবিতে সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেল ৪টায় পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ মেহেরনামা আবাসন এলাকায় নিহতের পিতার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ভুক্তভোগী পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্বামী আজিম উদ্দিন অভিযোগ করেন, শনিবার সকালে আমার দুই বছরের ছেলে উঠানে মলত্যাগ করে। এ নিয়ে বড় ভাই হেলাল উদ্দিন ও তার স্ত্রী মিনা আক্তারের সঙ্গে সানজিদার বাকবিতণ্ডা হয়। পরে আমার চার ভাই হেলাল উদ্দিন, শাহাব উদ্দিন, আলাউদ্দিন, সালাহ উদ্দিন, ভাবি শারমিন আক্তার মুন্নি, মিনা আক্তার, রাশেদা বেগম, মিনু আক্তার ও বোন জেয়াসমিন আক্তার মিলে লাঠিসোটা দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।
তিনি আরও বলেন, সকালে কাজে যাওয়ার পর স্ত্রী ফোন করে জানায়, তারা মারধরের চেষ্টা করছে এবং ধারালো কিরিচ দিয়ে ঘরে আঘাত করছে। কিছুক্ষণ পর ফোন কেটে যায়। পরে জানতে পারি স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়েছে, কিন্তু পৌঁছে দেখি সে আর বেঁচে নেই। পুলিশ ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চাইছে এবং থানায় অপমৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। তিনি বলেন, এর আগেও আমরা স্বামী-স্ত্রীকে কয়েক দফা মারধর করেছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দেওয়া আছে।
নিহতের মা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, মেয়ে ফোনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানিয়েছিল, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মারছে। পরে আর যোগাযোগ হয়নি। হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের লাশ দেখি। আমার মেয়েকে তারা বাঁচতে দেয়নি।
পিতা মাহমুদুল করিম অভিযোগ করে বলেন, রাত ১২টার দিকে পুলিশ কল করে থানায় যেতে বলে। সেখানে গিয়ে একটি কাগজে সই নিতে বলে। আমি পড়ালেখা জানি না, সই করেছি। পরে জানতে পারি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু পুলিশ জড়িতদের রক্ষা করছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছে এবং শ্বশুরবাড়িতে তালা ঝুলিয়ে রেখেছে বলে জানান পরিবার সদস্যরা।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, তাকে থানায় ডেকে আনা হয়নি। বাদীর দেওয়া কম্পিউটার টাইপে লেখা কাগজটি অপমৃত্যু হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।