কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা এলাকায় সবধরনের অপরাধ প্রবণতা রুখে দেয়ার মাধ্যমে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার অভিপ্রায়ে শ্রেনীপেশার সম্মানিত নাগরিকদের অংশ গ্রহনে চকরিয়া থানা পুলিশ ওপেন হাউজ ডে আয়োজন করেছে।
গতকাল রোববার (৩ আগস্ট) দুপুরে চকরিয়া থানার
সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শফিকুল ইসলাম।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চকরিয়া উপজেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতির সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য দেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) অভিজিৎ দাশ।
এসময় অনুষ্ঠানে বক্তরারা বলেন, চকরিয়ায় মাদক, চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাসী ও চিংড়ি ঘের দখল প্রতিনিয়ত চলছে। এছাড়া অবৈধ অস্ত্র দিয়ে প্রতিনিয়ত দখলদারিত্ব চলছে। এ সবের বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। বক্তাদের একটাই দাবি, মাদকের বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।
এসব দাবির জবাবে অনুষ্ঠানে এএসপি অভিজিৎ দাশ বলেন, ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত চকরিয়া উপজেলা। এখানে জনসংখ্যা প্রায় চার লাখের বেশি। এত বিশাল একটি উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা অল্প সংখ্যক পুলিশ সদস্যের জন্য রীতিমতো যুদ্ধের সামিল। তারপরও চকরিয়া উপজেলার সর্বস্থরের জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং এলাকাভিত্তিক সবধরনের অপরাধপ্রবণতা রুখে দিতে চকরিয়া থানা পুলিশের প্রতিটি ইউনিট দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, চকরিয়া উপজেলার প্রতিটি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের পাশাপাশি আমরা সকল শ্রেণীর নাগরিকের সহযোগিতা চাই। আপনারা চকরিয়া থানা পুলিশকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করুন। আপনার এলাকার খারাপ মানুষ তথা অপরাধীকে গ্রেপ্তারে নির্ভয়ে তথ্য দিন। কারণ আপনার এলাকার চিহ্নিত অপরাধীর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বা সামাজিক কোন পরিচয় বিবেচ্য হবে না। তাঁকে আইনের আওতায় আনতে চকরিয়া থানা পুলিশ কারো আদেশ উপদেশ শুনবে না।
অভিজিৎ দাশ আরও বলেন, অপরাধীকে গ্রেপ্তারে
তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রাখার শতভাগ নিশ্চয়তা দেবে থানার ওসি ও সংশ্লিষ্ট অফিসার। সেক্ষেত্রে কোন ব্যথ্বয় ঘটবে না। তিনি ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে বলেন, কোন বিষয়ে পুলিশের যেকোনো সদস্য অনিয়ম অসঙ্গতিতে জড়ালে বা তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে, তা নির্ভয়ে আমাকে অথবা ওসিকে জানাবেন। আমাদের কাছে তাঁর যথাযথ প্রতিকার পাননি মনে করলে আপনি পুলিশ সুপার মহোদয়কে জানাতে পারবেন। আপনাদের জন্য সেই সুযোগ নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ ইয়াছিন মিয়া’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চকরিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এনামুল হক, চকরিয়া পৌরসভা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার, পৌরসভা জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা কুতুবউদ্দিন, নাগরিক অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির পার্বত্য চট্টগ্রামে বিষয়ক সহ-সম্পাদক আবদুল কাদের (প্রাইম), বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামান, চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক জুবাইদুল হক, চকরিয়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জাফর আলম কালু, লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছার, সাংবাদিক মনির আহমদ, সাংবাদিক এম.মনছুর আলম, সাংবাদিক এম.আলী হোসেন, এম.নুরুদ্দোজা জনি, পৌরসভা কৃষকদলের সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম, চকরিয়া পৌরসভা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল মাহমুদ, জামায়াত নেতা এহেছানুল করিম, সাংবাদিক আলাউদ্দিন আলো, রুহুল কাদের ও ফরিদা ইয়াছমিন প্রমুখ।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার ফারুক খোকন, চকরিয়া পৌরসভা জামায়াত নেতা মাওলানা এহেছানুল হক, চকরিয়া পৌরসভা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি সোহেল মাহমুদ, চকরিয়া উপজেলা ছাত্র প্রতিনিধি সামসুল ইসলাম সাঈদী ও মোবারক হোসেন জিহান প্রমুখ।