শিরোনাম ::
কক্সবাজারে এনসিপির নেতারা সত্য উন্মোচন করেছেন : নাহিদ টেকনাফে একরামুল হত্যা: সাবেক এমপি বদিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি কক্সবাজারে প্রতিবাদ মিছিলে বক্তব্যের পর বিএনপি নেতার মৃত্যু টেকনাফে চাকমা যুবক অপহরণের ঘটনায় আটক ৫ সৈয়দ নূরের আকস্মিক মৃত্যু দলের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি- শাহজাহান চৌধুরী চকরিয়ায় এনসিপির মঞ্চ ভাঙচুর আওয়ামী ফ্যাসিবাদেরই অনুসরণ: ইসলামি আন্দোলন এর পরও আমাকে ‌‘র’ এর এজেন্ট বললে ধরে নিতে হবে আমার তকদিরে আছে চকরিয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে এনসিপির সমাবেশ পন্ডঃ মঞ্চ ভাঙচুর চরম জনবল সংকটে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছেলের বাইক দুর্ঘটনার খবর শুনে স্ট্রোক করে মারা গেলেন মা
সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

পাহাড়ের অবৈধ বসতি উচ্ছেদে জ্বলছে প্রতিহিংসার আগুন

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: রবিবার, ১৯ জুন, ২০২২

পাহাড় ধসের ঘটনায় চার জনের মৃত্যুর পরপরই পাহাড়ে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদের পরিকল্পনা নেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এর ধারাবাহিকতায় রোববার (১৯ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে টানা বৃষ্টির মধ্যেই পূর্ব ফিরোজশাহ ১নং ঝিল এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।

এদিকে প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযানকে ঘিরে এলাকায় ক্ষোভ ও প্রতিহিংসার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযানের প্রথম দিকে এলাকাটির সামনের দিকের ঘরগুলোই মূলত উচ্ছেদ করা হয়। এই উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্তদের বক্তব্য, শুধু সামনের দিকের ঘরগুলোই নয়, ভাঙলে ভাঙতে হবে পিছনের দিকের ঘরও! তাই অভিযান পরিচালনাকারীরা যাতে পেছনের দিকের ঘর যেন না ভেঙে চলে না যান, সেদিকে ‘কড়া নজর’ রাখেন উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্তরা।

সরেজমিন ওই এলাকা পরিদর্শনে দেখা যায়, জেলা প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী ১২০টি ঘর উচ্ছেদের জন্য সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অভিযান শুরু হয়। শুরুতে ঝিল-১ এলাকার সামনের অংশের অবৈধ স্থাপনা ভাঙা হয়। ক্রমান্বয়ে ভেঙে যেতে যেতে বৃষ্টির প্রতিকূলতায় শেষ অংশে যেতে অনেকটা সময় লেগে যায়। এ কারণে বাকি ঘরগুলো না ভেঙে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন উচ্ছেদ অভিযানের সদস্যরা। কিন্তু এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে পড়েন ভাঙা স্থাপনার বাসিন্দারা। তাদের বক্তব্য, পিছনে ঝুঁকি বেশি থাকার পরও তাদের উচ্ছেদ না করে সামনের ঘরগুলো ভেঙে তাদের কেন বাস্তুহারা করা হয়েছে?

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা রাজু বলেন, আমরা তো বাংলাদেশের নাগরিক। মায়ানমারের রোহিঙ্গারা যদি আমাদের দেশে এসে থাকার জায়গা পায়, তাহলে আমরা কী দোষ করেছি? তাছাড়া সামনের দিকে অসহায় মানুষদের ঘর ভেঙেছে। ওদের ঘর পাহাড় থেকে ত্রিশ-চল্লিশ ফুট দূরে। কিন্তু স্থানীয় নেতাদের ঘর পাহাড়ের দশ ফুটের মধ্যে থাকলেও তাদের ঘর ভাঙা হচ্ছে না। এসব উচ্ছেদের মানে কী? উচ্ছেদ করলে সবাইকে করুক।

প্রায় একইসুরে কথা বলেন স্থানীয় দোকানি সেলিমও। তিনি বলেন, সামনের দিকে আমাদের ঘর-বাড়ি ভেঙে দিয়েছে। কিন্তু পাহাড়ের উপরে যারা বাড়ি করেছে, তাদের বাড়ি উচ্ছেদ করেনি। আমি জানতে চাই, সামনের দিকে বাড়িগুলো যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তাহলে পাহাড়ের উপরের বাড়িগুলো কি ঝুঁকিহীন? প্রশাসন কেন গরিবদের ওপর একচোখা আচরণ করছে?

এ প্রসঙ্গে চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার মাসুদ রানা বলেন, সকাল থেকে টানা বৃষ্টির মধ্যে আমাদের উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। আজকের (রোববার) অভিযানে এখন পর্যন্ত আমরা মোট ১৪৫টি অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদ করেছি। অভিযানে সব ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদ করা হবে। পুরোপুরি উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অভিযান চলবে।

উল্লেখ, গত শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে আকবর শাহ এলাকার ফিরোজ শাহ কলোনির ঝিল-১ ও বিজয়নগরে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে পৃথক এলাকায় দুইজন করে মোট চারজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া পাঁচজন আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনার পরদিন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদ অভিযানের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের সমন্বয়ে কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) উমর ফারুক, চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার মাসুদ রানা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন সরকারের নেতৃত্বে আকবর শাহ থানার ফিরোজ শাহ কলোনির ঝিল-১ এলাকায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মণীষা মহাজনও। এছাড়াও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ৫০ জন পুরুষ ও ২০ জন নারী সদস্য অভিযানে যুক্ত হন। এরবাইরে র‌্যাবের দুটি টিম, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি টিম, স্থানীয় কাউন্সিলর ও আনসার সদস্যরা এ অভিযানে সহযোগিতা করছেন।


আরো খবর: