শিরোনাম ::
বাংলাদেশে চীনের জরুরি চিকিৎসা-সামগ্রী হস্তান্তর “বাবা আমি ভুল করিনি, সুইসাইড নোটে লিখে আত্মহত্যা করলো নবম শ্রেণির ছাত্র! গ্রিসে ঘুরতে আসা ইসরায়েলির কান ছিঁড়ে ফেললেন সিরীয় নাগরিক সিঙ্গাপুরের ব্যস্ত সড়কে হঠাৎই দেবে গেল রাস্তা, চলন্ত গাড়ি পড়লো গর্তে মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তে দগ্ধদের দেখতে গেলেন প্রধান উপদেষ্টা দেশের তরুণ সমাজই ডিজিটাল রূপান্তরের প্রধান চালিকাশক্তি সাবেক এমপির বাসায় গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি, আটক ৫ চকরিয়ায় দিনেদুপুরে গরীব পরিবারের উপর ফিল্মিস্টাইলে সন্ত্রাসী হামলা, মা-ছেলেকে কুপিয়ে জখম মাসিক ভাতার পাশাপাশি জুলাই যোদ্ধারা আরও যেসব সুবিধা পাবেন চকরিয়ায় পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রীকে ধর্ষণ,আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি আসামীর
রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

ভারতে পাঠ্যবই থেকে মুছছে মুঘলদের ইতিহাস

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৩


নয়াদিল্লি, ২১ এপ্রিল – ভারতীয় স্কুলের পাঠ্যপুস্তক থেকে মুঘল শাসকদের ওপর লেখা একটি অধ্যায় বাদ দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের কীভাবে ইতিহাস শেখানো উচিত, তা নিয়ে তুমুল বিতর্ক হচ্ছে। ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি) পাঠ্যপুস্তকের একটি নতুন পাঠ্যক্রম প্রকাশের পর আলোচনাটি ছড়িয়ে পড়ে। এনসিইআরটি কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা। সরকারের সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের অধীনে এনসিইআরটি শিশুদের পরীক্ষার জন্য পাঠ্যক্রম পরিবর্তন এবং পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুর তত্ত্বাবধান করে। খবর বিবিসির।

এছাড়া নতুন পাঠ্যপুস্তকে মহাত্মা গান্ধী হত্যা এবং ২০০২ সালে গুজরাটে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার বিষয়টি অপসারণ করা হয়েছে।

এনসিইআরটি বলেছে, পাঠ্যক্রমকে আরও যৌক্তিককরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এসব পরিবর্তন আনার বিষয়ে গত বছর ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এসব পরিবর্তন শিশুদের জ্ঞান অর্জনকে প্রভাবিত করবে না, বরং কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী সময়ে শিশুদের ওপর চাপ কমিয়ে দেবে।

তবে সমালোচকরা বলছেন, এভাবে বাদ দেওয়াটা উদ্বেগজনক এবং এতে শিক্ষার্থীদের নিজের দেশকে বোঝার ওপর প্রভাব ফেলবে। তারা মুঘল রাজবংশের অংশটি মুছে ফেলায় বিশেষভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এনসিইআরটিকে ইতিহাসের কিছু অংশ মুছে ফেলার জন্য দায়ী করেন, যেগুলোর বিরুদ্ধে হিন্দু ডানপন্থী দলগুলো বছরের পর বছর ধরে প্রচারণা চালিয়ে আসছিল।

মুঘলরা বহু শতাব্দী ধরে ভারতীয় উপমহাদেশের বিশাল অংশ শাসন করেছে। অনেক ডানপন্থী নেতাকর্মী ও ইতিহাসবিদ তাদেরকে বিদেশি হানাদার হিসেবে দেখছেন। তাদের দাবি, তারা ভারতীয় ভূমি দখল করে দেশটির হিন্দু সভ্যতাকে কলুষিত করেছে।

রাজনৈতিক ইসলাম নিয়ে কাজ করেন এবং সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব ডেভেলপিং সোসাইটিজে পাঠদান করেন হিলাল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা ভীষণভাবে বিভক্ত একটা সময়ে দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানছে। ইতিহাসের যেটা অস্বস্তিকর বা অসুবিধাজনক বলে মনে হয়, সেটা সরিয়ে দিয়ে আমরা তাদেরকে ক্রিটিক্যালি চিন্তা করার সুযোগ দিচ্ছি না।’

পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনার সমর্থকরা যুক্তি দেন, স্কুলের ইতিহাস বইগুলোতে কিছুটা সংশোধন করা প্রয়োজন, কারণ সেগুলোতে মুসলিম শাসকদের খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এনসিইআরটির পাঠ্যপুস্তকের অনেক অধ্যায় লিখেছেন ইতিহাসবিদ ও শিক্ষাবিদ মাখন লাল। তিনি বলেন, ‘মুঘল শাসনামল ছিল ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম রক্তক্ষয়ী সময়। আমরা কি তাদের পরিবর্তে বিজয়নগর সাম্রাজ্য বা চোল কিংবা পান্ডবদের সম্পর্কে আরও লিখতে পারি না?’

এনসিইআরটির পরিচালক দীনেশ সাকলানি পাঠ্যক্রমের নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ককে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে অভিহিত করেছেন। একইসঙ্গে তিনি এখনও স্কুল শিক্ষার্থীদের মুঘলদের ইতিহাস শেখানো হয় বলে স্পষ্ট করেছেন। বিবিসি এ বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে দীনেশ সাকলানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কিংস অ্যান্ড ক্রনিকলস : দ্য মুঘল কোর্টস নামের অধ্যায়টি দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৩০ পৃষ্ঠার অধ্যায়টিতে মুঘল দরবারগুলোর কর্মকাণ্ড উঠে এসেছে। মুঘল ইতিহাসের এই কীভাবে হিন্দু, জৈন ও মুসলমানসহ বিভিন্ন জাতিগত ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের সমন্বয়ে সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল, তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

ভারতে অবশ্য ইতিহাস বইয়ের পাঠ্যক্রম সংশোধনের ঘটনা নতুন নয়। অতীতেও বিভিন্ন সরকারের অধীনে পাঠ্যপুস্তকগুলো সংশোধন করা হয়েছে।

সূত্র: এনটিভি
আইএ/ ২১ এপ্রিল ২০২৩


আরো খবর: