ঢাকা, ১৩ আগস্ট – বাংলাদেশে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের পর মানবাধিকার পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও উদ্বেগের জায়গা এখনো রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। দেশের ২০২৪ সালের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে দপ্তরের মানবাধিকার বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের জুলাই ও আগস্টে কয়েক সপ্তাহ ধরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এবং পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সংঘর্ষে শত শত মানুষ নিহত হওয়ার পর ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করেন। পরে ৮ আগস্ট রাষ্ট্রপতি শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘প্রধান উপদেষ্টা’ (প্রধানমন্ত্রীর সমমর্যাদার) করে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আগস্টের ওই ঘটনার পর মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও কিছু বিষয় নিয়ে শঙ্কা থেকে গেছে।
প্রতিবেদনে আগের সরকারের আমলে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বলা হয়েছে, নির্বিচারে বা বেআইনি হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন কিংবা নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি, নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা আটক, বিদেশে থাকা সমালোচকদের সরকারিভাবে হয়রানি, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর গুরুতর বিধিনিষেধ, যার মধ্যে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি, সাংবাদিকদের অযৌক্তিকভাবে গ্রেপ্তার বা বিচার, সেন্সরশিপ, শ্রমিক সংগঠনের স্বাধীনতার ওপর উল্লেখযোগ্য বিধিনিষেধ, শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তি বা শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা হুমকি এবং শিশুশ্রমের সবচেয়ে খারাপ ধরন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বিদ্যমান ছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আগের সরকারের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপক দায়মুক্তির অসংখ্য খবর পাওয়া গেছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কর্মকর্তা বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত বা শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব কমই বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে সরকার পতনের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় আগের সরকারের বহু সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।