শিরোনাম ::
হরতালের সমর্থনে চকরিয়ায় মধ্যরাতে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের বিক্ষোভ চকরিয়ায় দৈনিক যুগান্তরের মালিক নুরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল কক্সবাজারে এনসিপির নেতারা সত্য উন্মোচন করেছেন : নাহিদ টেকনাফে একরামুল হত্যা: সাবেক এমপি বদিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি কক্সবাজারে প্রতিবাদ মিছিলে বক্তব্যের পর বিএনপি নেতার মৃত্যু টেকনাফে চাকমা যুবক অপহরণের ঘটনায় আটক ৫ সৈয়দ নূরের আকস্মিক মৃত্যু দলের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি- শাহজাহান চৌধুরী চকরিয়ায় এনসিপির মঞ্চ ভাঙচুর আওয়ামী ফ্যাসিবাদেরই অনুসরণ: ইসলামি আন্দোলন এর পরও আমাকে ‌‘র’ এর এজেন্ট বললে ধরে নিতে হবে আমার তকদিরে আছে চকরিয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে এনসিপির সমাবেশ পন্ডঃ মঞ্চ ভাঙচুর
সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

ছুটির দিনে তিল ধারণের ঠাঁই নেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে!

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট: শুক্রবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২২

হোটেল রেস্তোরাঁ নিয়ে নেতিবাচক খবরে ধরে রাখতে পারেনি পর্যটকদের। শুক্রবার হঠাৎ পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে কক্সবাজারে। গত কয়েকদিন ধরে গণমাধ্যমে নানা নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হয়েছে কক্সবাজার।

শুক্রবার সকালে ও বিকালে সমুদ্র সৈকতের লাবণী ও সুগন্ধা পয়েন্টে সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরো সৈকতজুড়ে মানুষ আর মানুষ। কোথাও যেন তিল ধারনের ঠাঁই নেই। হোটেল মোটেল জোনে দেখা গেছে, প্রায় হোটেলে বুকিং বেড়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই পর্যটকরা কক্সবাজার আসতে শুরু করেছেন। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি কাটিয়ে তারা গন্তব্যে ফিরবেন। এরপর থেকে হয়তো একটু চাপ কমতে পারে।

এদিকে পর্যটকদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষ। বেড়েছে তীব্র যানজট। তবে পর্যটকদের দাবি, হোটেল ব্যবসায়ীরা নিয়মিত দ্বিগুণ-তিনগুণ পর্যন্ত দাম বেশি নিচ্ছেন। খাবারের রেস্তোরাঁগুলোও নিচ্ছে চড়া দাম।

খবর নিয়ে জানা গেছে, শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেলের বেশির ভাগ কক্ষ সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে আগাম বুকিং হয়ে যায়। একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের কোনো জাহাজেই খালি সিট মিলছে না। সব জাহাজের টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। এ চাপ থাকবে অন্তত এ মাসে।

সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলি পয়েন্টে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের সমাগম। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্যমেলা। এতে শহরে স্থানীয়দের ভিড়ও বেড়েছে।

হোটেল মালিকরা জানান, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিন দিন সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীরা কক্সবাজারমুখী হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কক্সবাজারে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারী ট্যুরস অ্যান্ড সার্ভিসেস কক্সবাজার অফিস ইনচার্জ নুর মোহাম্মদ ছিদ্দিকী বলেন, ‘পুরো জানুয়ারি মাস তাদের জাহাজে টিকেট সংকট রয়েছে। এতদিন ভ্রমণপিয়াসু লোকজন বের হতে পারেননি নানা কারণে। এখন প্রতিদিন যাত্রী ও পর্যটকরা টিকিটের জন্য ভিড় করছেন। আমরা কাউকে টিকিট দিতে পারছি না।’

ট্যুর অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সভাপতি রেজাউল করিম রেজা জানান, নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে কক্সবাজারে প্রচুর পর্যটক থাকে। বিশেষ করে ডিসেম্বর থেকে বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে কক্সবাজার। সেন্টমার্টিনগামী জাহাজগুলোর টিকিটও আগাম বুকিং হয়ে যাচ্ছে। তিনি আশা করেন, এ মাসে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসবেন।

পর্যটকরা বলেন, হয়তো দেশে লকডাউন দিতে পারে সরকার। তাই অনেকে তড়িগড়ি করে ছুটির ফাঁকে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন। আর অনেক প্রতিষ্ঠান ও পারিবারিক গ্রুপ ভ্রমণে ছুটে এসেছেন সৈকত নগরীতে।

বেড়াতে আসা পর্যটক ঢাবি ছাত্র আশফাক উদ্দিন আহমেদ বলেন, আগের কক্সবাজার আর এখনকার কক্সবাজার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সৈকতে আগে প্রচুর ময়লা আবর্জনা থাকতো এখন প্রায় পরিস্কার। পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনও তৎপর দেখা গেছে।

সিলেট থেকে বেড়াতে আসা আলমগীর বলেন, কোভিড পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর আসা হয়নি। তাই এবার ছুটিটা কাজে লাগিয়ে দিলাম। অনেক ভালো লাগছে বেড়াতে এসে। দেখলাম ভিড়ের মাঝে পর্যটকরা কক্সবাজারে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন সে জন্য সাদা পোশাকধারী পুলিশ ও সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। এটি ভালো হয়েছে। তবে যথেষ্ট পরিবহন সংকট রয়েছে। বরাবরের মতো হোটেল ও রেঁস্তোরায় অতিরিক্ত দাম নিচ্ছে।

চট্টগ্রাম থেকে আসা খোরশেদ জানান, পর্যটন নগরীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি কিছুটা অপ্রপচার দেখে মনটা খারাপ ছিল। পরে এখানে এসে দেখি পর্যটক আর পর্যটক। খুব ভালো লেগেছে।

সম্প্রতি কক্সবাজার হোটেল মোটেল-জোনে পর্যটক নারী ধর্ষণ ও হোটেল রেস্টুরেন্টে অযৌক্তিক ভাড়া আদায় করার বিষয়ে কক্সবাজারের পর্যটন নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা হয়ে আসছে। এই প্রচারণাকে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা কোনো কোনো মহলের পরিকল্পিত কক্সবাজারবিরোধী প্রচারণা বলে মনে করেন।

কক্সবাজার হাটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আবুল কাশেম সিকদার বলেন, প্রচুর পর্যটক এসেছেন সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতে কক্সবাজারে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসন যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছেন সবগুলো যাতে বাস্তবায়ন হয় তার প্রতি তারা সতর্ক রয়েছেন।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানান, আগত পর্যটকের ভিড়ের মাঝে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে জন্য জেলা প্রশাসনের সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির পর্যটন সেলের সদস্যরাও ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সৈকতে দায়িত্ব পালন করছে। কোনো পর্যটক হয়রানির শিকার হলে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

টুরিস্ট পুলিশের এসপি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, পরিবেশ শান্ত থাকায় ব্যাপক পর্যটক এসেছেন। ট্যুরিস্ট পুলিশ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
ঢাকা টাইমস


আরো খবর: