ঢাকা, ০৪ আগস্ট – ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মতো দ্বিতীয় সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে আজ।
এর আগে, রোববার (৩ আগস্ট) সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে খোকন চন্দ্র বর্মণের (২৩) সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন আদালত।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল- ১ এর বিচারিক প্যানেলে প্রথমে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের পরপরই এই মামলায় প্রথম সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন খোকন চন্দ্র বর্মণ।
এরপর শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন খোকন চন্দ্র বর্মণ জেরা করেন। আজ এই মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
চিফ প্রসিকিউটরের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের আগে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান দিনটিকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন। তিনি গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ন্যায়বিচার চেয়ে ট্রাইব্যুনালে বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। সেই সঙ্গে এই মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ৩ আগস্ট ও সাক্ষ্যের জন্য ৪ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
গত ১৬ জুন ট্র্যাইব্যুনাল-১ পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে হাজির হতে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন এবং পরদিন দুটি পত্রিকায় শেখ হাসিনা ও কামালকে ৭ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
তবে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও পলাতক দুই আসামি ট্রাইব্যুনালে হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী দিয়ে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী শুনানি শেষে গত ১০ জুলাই এই মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্র্যাইব্যুনাল-১।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রথম মামলাটি (মিস কেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যার ঘটনায়।
সূত্র: জাগো নিউজ
এনএন/ ০৪ আগস্ট ২০২৫