শিরোনাম ::
মহেশখালীতে কোস্ট গার্ড ও পুলিশের যৌথ অভিযানে কুখ্যাত ডাকাত ‘হাতকাটা জয়নাল’ আটক দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রবাসীদের জন্য সৌদির সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে রোববার ছাত্রদল-এনসিপির সমাবেশ, যান চলাচলে ডিএমপির নির্দেশনা জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া চূড়ান্ত, ৫ আগস্ট জাতির সামনে উপস্থাপন কুতুবদিয়ায় সমুদ্র সৈকতে মহেশখালীর যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার ‎ রামুতে রেলের সাথে সিএনজি অটোরিক্সার সংঘর্ষ, নারী শিশুসহ ৫ জন নিহত, উখিয়ায় অটোরিকশা চালকের আসনের নিচে মিলল ইয়াবা, চালক পলাতক চকরিয়ায় চারটি মামলার আসামিকে গুলি করে হত্যা কক্সবাজারে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজি চালকসহ নিহত ৪ জামায়াতে আমিরের হার্টের বাইপাস সার্জারি শুরু হয়েছে
August 2, 2025, 8:23 pm
নোটিশ::
আমাদের নতুন ডোমেইনে আপনাকে স্বাগতম, কক্সবাজার পোস্ট ডটকমের জনপ্রিয়তাকে পুজিঁ করে অনেক নতুন ফেইসবুক পেইজ খোলা হয়েছে,তাদের কার্যকলাপের জন্য আমরা দায়ী নয়  

মার্কিন আগ্রাসনের ২০ বছর, ইরাকের পুরাকীর্তিগুলো কোথায়?

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: সোমবার, এপ্রিল ১০, ২০২৩
মার্কিন আগ্রাসনের ২০ বছর, ইরাকের পুরাকীর্তিগুলো কোথায়?


বাগদাদ, ০৯ এপ্রিল – রাজধানী বাগদাদের কেন্দ্রে অবস্থিত ইরাক জাতীয় জাদুঘরে প্রবেশ করলে মনে হতে পারে যেন হাজার হাজার বছর আগে ফিরে গেছেন। এ জাদুঘরে ২৮টি গ্যালারি ও ভল্টে প্রায় ৫০০০ বছর পুরনো মেসোপোটেমিয় ইতিহাসের সাক্ষ্য বহনকারী বহু গুরুত্বপূর্ণ হস্তনির্মিত নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে। এখানে কালজয়ী নিদর্শন হিসেবে সুমেরীয়, ব্যাবিলনীয়, আক্কাদীয় ও অ্যাসিরিয় সভ্যতার কিছু শিল্পকর্ম ও হস্তনির্মিত নিদর্শনের দেখা মেলে।

চিত্তাকর্ষক ভাস্কর্যগুলো ইরাকের প্রাচীন ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা বছরের পর বছর ধরে ধ্বংস ও লুটপাটের ফলে শেষের পথে। এটি এমন একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যে বিষয়টি নিয়ে এখন জোর তৎপরতা চালাচ্ছে ইরাক সরকার।

২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমণের পরের বছরগুলোতে ইরাক জাতীয় জাদুঘরের মতো বিভিন্ন জাদুঘর থেকে বিপুল প্রত্নসামগ্রী চুরি হয়ে যায়। সারা দেশে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলোতে অবৈধ খননের কারণেও খোয়া গেছে অনেক নিদর্শন। এ ছাড়া ২০১৪ সালের পর আইএস-এর উত্থানের পর অনেক শিল্পকর্ম ধ্বংস করা হয়েছিল।

ইরাকি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পুরাকীর্তি ও ঐতিহ্যের জন্য জেনারেল অথরিটির মিডিয়া ডিরেক্টর হাকিম আল-শামারি বলেন, ‘চুরি হওয়া পুরাকীর্তি উদ্ধারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

মার্কিন আগ্রাসনের ২০ বছর, ইরাকের পুরাকীর্তিগুলো কোথায়?

আল-শামারি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুসারে আমরা এই শিল্পকর্মগুলোকে তাদের আসল মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে আনার কাজ করছি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ১৭ হাজার এবং লেবানন থেকে ৩৬৪টি প্রত্নবস্তু পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, বেলজিয়াম, মিসর, সৌদি আরব, কুয়েত, ইরান এবং জর্ডানেও পুরাকীর্তি পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।’

গত ৩০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র থেকে চুরি যাওয়া নয়টি প্রত্নবস্তু ফেরত আনার ঘোষণা দেয় ইরাকি প্রেসিডেন্সি। যার মধ্যে ব্যাবিলনীয়দের সাতটি সীল, হাতির দাঁতের টুকরো এবং মধ্য ব্যাবিলনীয় যুগের একটি মাটির ট্যাবলেট (লেখার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতো, বিশেষ করে কিউনিফর্মে লেখার জন্য) রয়েছে।

আংশিক সাফল্য

বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্বের অধ্যাপক এবং প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ হায়দার ফারহানের মতে, কিছু পুরাকীর্তি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্যের প্রশংসা করা হলেও, অনেক কাজ বাকি আছে।

ফারহান বলেন, ‘চুরি হওয়া পুরাকীর্তি উদ্ধারের জন্য ইরাকি সরকারের আলোচনা…ইতিবাচক। কিন্তু এই প্রচেষ্টাগুলো সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাশা পূরণ করবে না। যা অর্জন হয়েছে তা আংশিক সাফল্য মাত্র।’

‘ইরাকি জাদুঘর থেকে কত প্রত্নসামগ্রী চুরি হয়েছে তার কোনও সরকারি পরিসংখ্যান নেই। ইরাকি জাদুঘরের হোল্ডিং এর অফিসিয়াল ইনভেন্টরির দিকে তাকালে বোঝা যায়, প্রদত্ত সংখ্যাগুলো আসলে ভুল এবং অসম্পূর্ণ’… যোগ করেন ফারহান।

মার্কিন আগ্রাসনের ২০ বছর, ইরাকের পুরাকীর্তিগুলো কোথায়?

সারা বিশ্ব থেকে ইরাকি পুরাকীর্তি ফিরিয়ে আনার মূল ভূমিকায় থাকা ইরাকি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আল জাজিরার পাঠানো প্রশ্নের জবাব দেয়নি। তবে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হুসেন বলেছিলেন যে ১৮ হাজার চোরাচালানকৃত প্রত্নবস্তু ইরাকে ফেরত আনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পেলে চুরি হওয়া সব জিনিস ফেরত আনা সম্ভব হবে।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (ইউনেস্কো) বাগদাদ কার্যালয় আল জাজিরাকে জানায়, ইতোমধ্যে উদ্ধার করা ৩০ হাজার চিত্রকর্ম ছাড়াও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৪০ হাজারেরও বেশি প্রত্নবস্তু পুনরুদ্ধার করতে ইরাকি সরকারের সঙ্গে কাজ করছে তারা।

‘যুক্তরাষ্ট্রের যত দোষ’

দেশের ইতিহাস চুরি যাওয়ায় জন্য অনেক ইরাকি যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেন। ইরাকে আগ্রাসন শুরুর পর মার্কিন জেনারেলরা দেশটির প্রত্নসম্পদ রক্ষার বিষয়ে উদাসীন ছিলেন বলে অভিযোগ আছে ঢের।

প্রত্নতাত্ত্বিক আবদুল-রাজ্জাকের মতে, অবহেলাটি ছিল ইচ্ছাকৃত।

তিনি বলেন, ‘আমেরিকান ট্যাঙ্কগুলো বিশৃঙ্খলার সময় ইরাকি জাদুঘরকে ঘিরে রেখেছিল। কিন্তু তারা পুরাকীর্তি চোরদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যার ফলে ১৪ হাজার মূল্যবান জিনিস চুরি হয়ে যায়।’

মার্কিন আগ্রাসনের ২০ বছর, ইরাকের পুরাকীর্তিগুলো কোথায়?

রাজ্জাক বলেন, ‘যদিও মার্কিন সেনাবাহিনী পরবর্তীতে ইরাকি প্রত্নতাত্ত্বিক প্রতিষ্ঠানের চাপের কারণে পুরাকীর্তি রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল, তবে তারা প্রাথমিকভাবে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলোকে ঘাঁটি এবং শিবির হিসেবে নিয়েছিল। আমেরিকান সেনাবাহিনী প্রাচীন ব্যাবিলন শহরটিকে একটি সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেছিল। মসুলের নিমরুদ শহর এবং সারা দেশের অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলোর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
এম ইউ/০৯ এপ্রিল ২০২৩





আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর: