শিরোনাম ::
চকরিয়ায় শশুর বাড়িতে যাবার পথে অস্ত্রের মুখে আটকিয়ে সেনা সদস্য ও তাঁর স্ত্রীকে মারধর, সর্বস্ব ছিনতাই চরম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে পর্যটন উন্নয়নে প্রমোশনাল পরিকল্পনা কর্মশালা অনুষ্ঠিত রামুতে ২৪ হাজার পিস ইয়াবাসহ বিজিবির হাতে আটক ১ বাপের বাড়ি থেকে ফেরার একদিন পর চকরিয়ায় ভাড়া বাসা থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে উখিয়ায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের যুবদের নাগরিক সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন রামুতে সমাজ পরিবর্তনে কিশোর কিশোরীদের ভূমিকা নিয়ে কর্মশালা রামুতে মামলা প্রক্রিয়া নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ চকরিয়ায় উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন ও নতুন সড়ক উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক পেকুয়ায় তিন যুগ পর স্থানীয়দের উদ্যোগে রাস্তা সংস্কার
বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:১০ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

রামুতে মামলা প্রক্রিয়া নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

রামু প্রতিনিধি::

রামুতে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। বিষযটি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা বলেন, পুলিশ প্রশাসনের এ ধরনের পক্ষপাতিত্ব ও দ্বিচারিতা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের মারাত্মক লঙ্ঘন। পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানান।

প্রাপ্ততথ্যে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই দুপুরে চৌমুহনী থেকে দুই ব্যক্তিকে মব থেকে আটক করে রামু থানা পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে আবদুর রহিম তিনি কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেনের বড় ভাই। যার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে নেতিবাচক ভূমিকার অভিযোগ রয়েছে। অপরজন মোঃ রিদোয়ান, তিনি রামুর চৌমুহনী স্টেশনস্থ ‘খেলাঘর’ নামে একটি দোকানের কর্মচারী।

পরদিন দোকান কর্মচারী রিদোয়ানকে রাজনৈতিক মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হলেও কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেনের বড় ভাইকে ১৫১ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়। তাদের নামে থানায় পূর্বে কোনো নিয়মিত মামলা না থাকলেও, একজনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা দায়ের করে এবং অন্যজনকে সহজ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে রামু থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সর্বত্র বিতর্কের উদ্ভব হয়।

জুলাই আন্দোলনের নেতা জসীম উদ্দীন জানান, একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে দোকান কর্মচারী রিদোয়ানকে আটক করে রাজনৈতিক মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়। অথচ একই দিনে আটক হওয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেনের বড় ভাই আবদুর রহিমকে ১৫১ ধারায় আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।

তিনি জানান, স্বৈরাচারের দোসর আবদুর রহিম রামু বাইপাস এলাকায় জুলাই আন্দোলনরত ছাত্রদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলো। ছাত্রদের কাছ থেকে মেবাইল কেড়ে নিয়ে নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে আন্দোলনকে দমন করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। আমরা মনে করছি রামু থানার ওসি তৈয়বুর রহমান অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে আবদুর রহিমকে রাজনৈতিক মামলায় চালান না দিয়ে ১৫১ ধারায় কোর্টে চালান দিয়েছে।

ভুক্তভোগী রিদোয়ানের পিতা মনছুরের অভিযোগ, রিদোয়ান দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছে। রাজনীতিতে জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। পুলিশ রিদোয়ানকে বিনা ওয়ারেন্টে আটক করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা একটি রাজনৈতিক মামলায় চালান করে। যার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মূলত ব্যক্তিগত শত্রুতা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে পুলিশকে দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে বলে জানান।

অ্যাডভোকেট শিপ্ত বড়ুয়া বলেন, যাকে তাকে ধরে রাজনৈতিক মামলায় চালান দেওয়া পুলিশের ব্যাড প্র্যাকটিস। একই দিনে দুজনকে একই ধরণের অভিযোগে আটক করে একজনকে নিয়মিত মামলায় আরেকজনকে নামমাত্র ১৫১ ধারায় চালান দেওয়ার ঘটনায় স্পষ্ট বুঝা যায়, রামু থানা পুলিশ অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে এই কাজ করেছে। এই বিষয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে তদন্ত করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, পুলিশের এরকম বৈষম্যমূলক আচরণ বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও জনগণের আস্থাকে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় অনেক নির্দোষ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, যা আইনের অপপ্রয়োগের দৃষ্টান্ত।

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ তৈয়বুর রহমান জানান, আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না পাওয়ায় তাকে ১৫১ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে ছাত্রদের বাঁধা প্রদানে জড়িত থাকলে রহিমকে আবারও গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) ও মুখপাত্র মোঃ জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, আটক দুইজনের মধ্যে একজন নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার সরকারী বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোন মামলা নাই। দ্বিতীয়ত তিনি একজন সরকারি চাকরিজিবী। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় আমরা তাকে ১৫১ ধারায় চালান দিই।


আরো খবর: